বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আহতদের মধ্য থেকে কিছু সংখ্যককে পুলিশে চাকরি দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। তিনি বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে যারা আহত হয়েছেন তাদের কর্মসংস্থানের একটা ব্যবস্থা কীভাবে করা যায় সে বিষয়ে আমরা আলোচনা করেছি। যারা আহত হয়েছে তাদের পুলিশে চাকরি দেয়ার বিষয়ে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আপাতত একশ’ জন আহতকে দিয়ে শুরু করতে যাচ্ছি, পরবর্তী সময়ে আমরা এই সংখ্যাটা আরও বাড়াব। সম্প্রতি এসবি ও সিআইডি’র প্রধান কার্যালয় পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, আমরা আপাতত পুলিশে শুরু করছি, পরবর্তী সময়ে আমার মন্ত্রণালয়ের অধীনে থাকা সব ডিপার্টমেন্টে এটা করে দেব। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, বিগত সরকারের আমলে সব থেকে বড় সমস্যা ছিল মানিলন্ডারিং। এটা নিয়ে আমি সিআইডি প্রধানকে ইন্সট্রাকশন দিয়েছি। বলেছি, দ্রুত বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে রিজার্ভ চুরির ঘটনার প্রতিবেদন দেয়ার জন্য। তদন্তের নামে সময়ক্ষেপণে লাভ নেই। আমি একটা রিপোর্ট চাই, যে কারা কারা মানিলন্ডারিংয়ের সঙ্গে জড়িত, সেটা আমি সিআইডিকে বলেছি। যদি তদন্তের নামে দুই তিন বছর চলে যায়, তাহলে এটার কোনো কার্যকারিতা থাকে না। জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ট্রাফিকের একটা সমস্যা রয়ে গেছে। ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণে আমরা এক হাজার ছাত্রকে নিয়োগ দেয়ার বিষয়ে প্রস্তাব পাঠিয়েছিলাম। এখন পর্যন্ত ৪০০ জন শিক্ষার্থীকে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। আমরা আরও একটি প্রস্তাব পাঠিয়েছিলাম যে, বিভিন্ন বাহিনীতে যারা অবসরে গিয়েছেন, তাদের নিয়োগ দিয়ে ট্রাফিক শৃঙ্খলায় নিয়োজিত করা। তবে অবসরপ্রাপ্তরা এই বিষয়ে সাড়া খুব কম দিয়েছেন। আমি ভেবেছিলাম তারা অনেকে আসতে চাইবে, কিন্তু ওই রকম সংখ্যা আমরা পাইনি। তবে আমরা আপাতত ৫০-৬০ জনের মতো পেয়েছি। তবে চেয়েছিলাম অন্তত ৫০০ জন দিয়ে শুরু করি। শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ার সঙ্গে ট্রাফিকিংয়ের বিষয়টা কেমন হবে প্রশ্ন করা হলে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, তারা যেন পড়াশোনা ঠিক রাখতে পারে সেজন্য তাদের আমরা সময়টা কম দিয়েছি। তারা যেন পড়াশোনাও করতে পারে এবং ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণেও কাজ করতে পারে সেই ব্যবস্থা করেছি। একটা সম্মানিও দেয়া হচ্ছে। রাস্তায় তারা ২-৩ ঘণ্টা কাজ করবে। অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব পালনের পাঁচ মাস হয়েছে, এখন পর্যন্ত কী ধরনের উন্নতি আপনারা করেছেন, জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, আপনারা মিলিয়ে দেখেন, আগের চেয়ে উন্নতি হয়েছে কি না। পুলিশ তাদের কাজ শুরু করেছে। পুলিশ এখন একটু সময় নিয়ে কাজ করছে। রাস্তাঘাট চিনতে সময় লাগছে তাদের। গাড়ি নিয়েও সমস্যা হচ্ছে। আমরা এটাকে গুরুত্বের সঙ্গে দেখছি। পাঁচ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর অনেকে পালিয়ে গেছেন। এ বিষয়ে আপনারা কী ব্যবস্থা নিয়েছেন -এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ৫-৬ আগস্ট কোনো সরকারই ছিল না। তখন অনেকে পালিয়ে গেছেন। সীমান্ত পাড়ি দিয়ে প্রতিবেশী দেশে চলে গেছেন অনেকে। তখন তো আমরা ছিলাম না। তবে আমরা সরকারে আসার পর কেউ পালিয়ে গেছে কি না, সেটা বলেন। এরপরও যদি কেউ গিয়ে থাকেন, আমরা বিষয়টি দেখব।