বিশেষ খবর



Upcoming Event

ডাকসুতে শিবিরের নিরঙ্কুশ বিজয়

ক্যাম্পাস ডেস্ক সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়
img

দেশ ও জাতির ঐতিহাসিক সকল আন্দোলন-সংগ্রামে নেতৃত্বদানকারী সর্বশীর্ষ সংগঠন ঢাকা ইউনিভার্সিটি সেন্ট্রাল স্টুডেন্টস ইউনিয়ন (উটঈঝট)। দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর ৯ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত হলো ডাকসু নির্বাচন। এ নির্বাচনে ঐতিহাসিক পালাবদলের সাক্ষী হলো দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ ঢাবি। ইসলামী ছাত্রশিবির সমর্থিত ‘ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোট’ প্যানেল ডাকসু’র এ নির্বাচনে বিপুল ব্যবধানে জয়লাভ করে ছাত্র-রাজনীতির ভূচিত্রে নতুন এক অধ্যায়ের সূচনা করেছে। নির্বাচিত ১২টি সম্পাদকীয় পদের মধ্যে ৯টিই দখলে নিয়েছে এই জোট, বাকি তিনটি পদে জয়ী হয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী। এতে সহ-সভাপতি (ভিপি) হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোটের প্রার্থী সাদিক কায়েম, যিনি প্রচারের শুরু থেকেই তার দূরদর্শী নেতৃত্ব ও সাংগঠনিক দক্ষতার জন্য আলোচনায় ছিলেন। সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদে জয়ী হয়েছেন ঢাবি ছাত্রশিবিরের সভাপতি এসএম ফরহাদ, আর সহ-সাধারণ সম্পাদক (এজিএস) পদে নির্বাচিত হয়েছেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মহিউদ্দিন খান। এই নির্বাচনে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল, গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ (বাগছাস) ও অন্যান্য প্রধান ধারার স্বতন্ত্র প্যানেল কোনো পদেই বিজয় অর্জন করতে পারেনি, যদিও এবি জুবায়ের ও মোসাদ্দেকের স্বতন্ত্র প্যানেল আংশিক সাফল্য পেয়েছে। ডাকসু নির্বাচনে এই বিজয় শুধু ছাত্র রাজনীতির চিত্রই নয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের ভবিষ্যৎ নেতৃত্ব ও নীতি নির্ধারণে এবং জাতীয় পর্যায়ে রাজনীতিতে সক্রিয় দলগুলোর চলমান রাজনৈতিক ধারার মানোন্নয়নে ব্যাপক প্রভাব ফেলবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকগণ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনের ভোট ৯ সেপ্টেম্বর সকাল ৮টায় শুরু হয়ে শেষ হয় বিকেল ৪টায়। এর মধ্য দিয়ে দীর্ঘ ছয় বছর পর অনুষ্ঠিত হয় মিনি পার্লামেন্ট খ্যাত ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচন। এদিন মোট ৮টি কেন্দ্রে ৮১০টি বুথে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। এরপর ১০ সেপ্টেম্বর সকাল সাড়ে ৮টায় সিনেট ভবনে নির্বাচনের ফল ঘোষণা করেন ডাকসু’র চিফ রিটার্নিং অফিসার অধ্যাপক ড. মো. জসীম উদ্দিন। এবারের নির্বাচনে ডাকসু’র ২৮টি পদে প্রতিদ্ব›িদ্বতা করেছেন মোট ৪৭১ জন প্রার্থী। এরমধ্যে নারী প্রার্থী ছিলেন ৬২ জন। সহ-সভাপতি (ভিপি) পদে ৪৫ জন, সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদে ১৯ জন এবং সহ-সাধারণ সম্পাদক (এজিএস) পদে ২৫ জন প্রার্থী প্রতিদ্ব›িদ্বতা করেছেন। নারী প্রার্থীদের মধ্যে ভিপি পদে ৫ জন, জিএস পদে একজন ও এজিএস পদে ৪ জন প্রার্থী ছিলেন। এবার মোট ভোটার ছিলেন ৩৯ হাজার ৭৭৫ জন শিক্ষার্থী। এরমধ্যে ছাত্র ভোটার ২০ হাজার ৮৭৩ জন এবং ছাত্রী ভোটার ১৮ হাজার ৯০২ জন। নির্বাচনে ৮০ শতাংশের বেশি ভোটগ্রহণ হয়েছে। ছাত্রশিবির সমর্থিত প্যানেলের ভিপি প্রার্থী সাদিক কায়েম ১৪ হাজার ৪২ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্ব›দ্বী ছাত্রদল প্যানেলের ভিপি পদপ্রার্থী আবিদুল ইসলাম পেয়েছেন ৫ হাজার ৭০৮ ভোট। জিএস পদে এস এম ফরহাদ পেয়েছেন ১০ হাজার ৭৯৪। এ পদে তার নিকটতম প্রতিদ্ব›দ্বী ছিলেন ছাত্রদলের শেখ তানভীর বারী হামিম। তিনি পেয়েছেন ৫ হাজার ২৮৩ ভোট। এজিএস পদে ১১ হাজার ৭৭২ ভোটে জয় পেয়েছেন মুহা. মহিউদ্দীন খান। এ পদে তার নিকটতম প্রতিদ্ব›দ্বী ছাত্রদলের তানভীর আল হাদি মায়েদ পেয়েছেন ৫ হাজার ৬৪ ভোট। অন্যান্য পদের মধ্যে মুক্তিযুদ্ধ ও গণতান্ত্রিক আন্দোলন সম্পাদক পদে ফাতেমা তাসনিম জুমা ১০ হাজার ৬৩১, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক পদে মো. ইকবাল হায়দার ৭ হাজার ৮৩৩, কমনরুম, রিডিংরুম ও ক্যাফেটেরিয়া সম্পাদক পদে উম্মে ছালমা ৯ হাজার ৯২০, আন্তর্জাতিক সম্পাদক পদে খান জসীম ৯ হাজার ৭০৬, ক্রীড়া সম্পাদক পদে আরমান হোসেন ৭ হাজার ২৫৫ ভোট পেয়ে জয় পেয়েছেন। এছাড়া ছাত্র পরিবহন সম্পাদক পদে মো. আসিফ আব্দুল্লাহ ৯ হাজার ৬১, ক্যারিয়ার উন্নয়ন সম্পাদক পদে মো. মাজহারুল ইসলাম ৯ হাজার ৩৪৪, স্বাস্থ্য ও পরিবেশ সম্পাদক পদে আব্দুল্লাহ আল মিনহাজ ৭ হাজার ৩৮, মানবাধিকার ও আইন বিষয়ক সম্পাদক পদে সাখাওয়াত জাকারিয়া ১১ হাজার ৭৪৭ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। এ নির্বাচনে তিনটি পদে স্বতন্ত্র প্রার্থীরা জয়ী হয়েছেন। তারা হলেন- সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক পদে মুসাদ্দিক আলী ইবনে মোহাম্মদ। তিনি পেয়েছেন ৭ হাজার ৭৮২ ভোট। সমাজসেবা সম্পাদক পদে যুবাইর বিন নেছারী। তিনি পেয়েছেন ৭ হজার ৬০৮ ভোট। গবেষণা ও প্রকাশনা সম্পাদক পদে সানজিদা আহমেদ তন্বি পেয়েছেন ১১ হাজার ৭৭৮ ভোট। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে সদস্য পদ রয়েছে ১৩টি। এর মধ্যে ১১টিতে জয়ী হয়েছে ইসলামী ছাত্রশিবির সমর্থিত প্যানেলের সদস্যরা। একটিতে জয়ী হয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী। অন্যটিতে জয়ী বাম-সমর্থিত প্রার্থী। ছাত্রশিবিরের প্যানেল থেকে জয়ী হলেন- সাবিকুন নাহার তামান্না (১০ হাজার ৮৪), সর্ব মিত্র চাকমা (৮ হাজার ৯৮৮), আফসানা আক্তার (৫ হাজার ৭৪৭), রায়হান উদ্দীন (৫ হাজার ৮২), তাজিনুর রহমান (৫ হাজার ৬৯০), ইমরান হোসাইন (৬ হাজার ২৫৬), মিফতাহুল হোসাইন আল-মারুফ (৫ হাজার ১৫), মো. রাইসুল ইসলাম (৪ হাজার ৫৩৫), শাহীনুর রহমান (৪ হাজার ৩৯০), আনাস ইবনে মুনির (৫ হাজার ১৫), মো. বেলাল হোসেন অপু (৪ হাজার ৮৬৫)। বামপন্থী প্যানেল থেকে জয়ী হলেন- হেমা চাকমা (৪ হাজার ৯০৮)। স্বতন্ত্র জয়ী প্রার্থী হলেন- উম্মা উসওয়াতুন রাফিয়া (৪ হাজার ২০৯)।


বিশ্ববিদ্যালয় কম্পাস পত্রিকার সংখ্যা সমূহ

আরো সংবাদ

শিশু ক্যাম্পাস

বিশেষ সংখ্যা

img img img