বিশেষ খবর



Upcoming Event

মেডিকেল কলেজে শিক্ষক সঙ্কট চরমে

ক্যাম্পাস ডেস্ক মেডিকেল কলেজ

শিক্ষক সঙ্কটে ব্যাহত হচ্ছে দেশের মেডিক্যাল শিক্ষাব্যবস্থা। সরকারি মেডিকেল কলেজগুলোয় গড়ে শতকরা ৪০ ভাগ শিক্ষকের ঘাটতি রয়েছে। আর সরকারি ও বেসরকারি কলেজগুলোকে একত্রে হিসেবে করলে শিক্ষক ঘাটতির এই হার প্রায় ৬০ শতাংশের বেশি। এই শিক্ষাব্যবস্থায় নিম্নমানের চিকিৎসক তৈরি হওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন বিশেষজ্ঞরা। সরকারি ও বেসরকারি মেডিকেল কলেজে শিক্ষক সঙ্কট দূর করতে স্বাস্থ্য সচিবকে প্রধান করে সাত সদস্যের কমিটি করেছে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়। এই কমিটির প্রতিবেদনের তথ্য জাতীয় স্বাস্থ্য পর্ষদের সভায় উপস্থাপন করার কথা রয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, সরকারি-বেসরকারি মিলিয়ে ১০৫ মেডিকেল কলেজে এখন শিক্ষকের সংখ্যা প্রায় সাড়ে ৯ হাজার। দরকার রয়েছে প্রায় ২৫ হাজার জন। এই হিসাবে ৬০ শতাংশের বেশি শিক্ষক কম রেখেই মেডিকেল শিক্ষা দিয়ে যাচ্ছে কলেজগুলো। এমন পরিস্থিতিতেও মেডিকেল কলেজের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। বর্তমান দফায় ক্ষমতায় আসার পর ২০০৯ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত ৪৭ মেডিকেল কলেজের অনুমোদন দিয়েছে আওয়ামী লীগ সরকার। প্রতি জেলায় একটি করে সরকারি মেডিকেল কলেজ খোলার পরিকল্পনা আছে সরকারের। স্বাধীনতার পর প্রথম ২০ বছরে দেশে মেডিকেল কলেজ ছিল ৯ (সরকারি ছয়, বেসরকারি তিনটি)। ১৯৯২ থেকে ২০০৮ পর্যন্ত ৪৯ মেডিকেল কলেজ অনুমোদন দেয়া হয়। দেশে ১০৫ মেডিকেল কলেজের মধ্যে সরকারি ৩৬টি, আর বেসরকারি ৬৯টি। এসব কলেজে মোট শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৫২ হাজারের কিছু বেশি। যুক্তরাজ্য সরকারের আর্থিক সহায়তায় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সরকারি ও বেসরকারি মেডিকেল কলেজের পরিস্থিতি মূল্যায়ন করেছে। দু’জন বিশেষজ্ঞের তৈরি ‘বাংলাদেশের নতুন মেডিকেল কলেজের পরিস্থিতি মূল্যায়ন’ শীর্ষক ১৩০ পৃষ্ঠার প্রতিবেদনে আর নতুন মেডিকেল কলেজ না করার সুপারিশ করা হয়েছে।
এদিকে, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সহায়তায় বাংলাদেশ মেডিকেল এ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিল (বিএমডিসি) মানসম্পন্ন মেডিকেল শিক্ষার জন্য কোন্ বিষয়ে কতজন শিক্ষক (অধ্যাপক, সহযোগী অধ্যাপক, সহকারী অধ্যাপক, প্রভাষক এবং কিছু ক্ষেত্রে নির্দেশনাকারী) থাকতে হবে, তার নির্দেশিকা তৈরি করে ২০০৯ সালে। ৫০, ১০০ ও ২০০ শিক্ষার্থীর জন্য এ্যানাটমি, ফিজিওলজি, বায়োকেমিস্ট্রি, ফার্মাকোলজি, প্যাথলজি, ফরেনসিক মেডিসিন, কমিউনিটি মেডিসিন, মেডিসিন, সার্জারি, মাইক্রোবায়োলজি ও গাইনিতে কতজন শিক্ষক থাকবেন, তার উল্লিখিত নির্দেশিকায় আছে। কোনো কলেজে প্রতিবছর যদি ৫০ শিক্ষার্থী ভর্তি হন, তাহলে সেখানে অন্তত ১৯৮ শিক্ষক দরকার। ১০০ জন হলে শিক্ষক থাকতে হবে ২৯৩ জন, আর ২০০ জন ভর্তি হলে শিক্ষক থাকতে হবে প্রায় ৪০০।
বিএমডিসির মানদন্ড অনুযায়ী, ৩০ সরকারি মেডিকেল কলেজে কমপক্ষে ৮ হাজার ৩০০ শিক্ষক প্রয়োজন। এসব মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ বা দায়িত্বশীল কর্মকর্তাদের দেয়া তথ্য অনুযায়ী দেখা গেছে, এসব কলেজে এখন কাজ করছেন ৩ হাজার ৪৬ শিক্ষক। অর্থাৎ প্রয়োজনের ৬৩ শতাংশ শিক্ষক কম আছেন। আর্মড ফোর্সেস মেডিকেল কলেজ ও পাঁচটি আর্মি মেডিকেল কলেজ এই হিসেবের বাইরে। বেসরকারি কলেজেও শিক্ষকসঙ্কট ৬৯ বেসরকারি মেডিকেল কলেজের মধ্যে ৬২ কলেজে কতজন শিক্ষক আছেন, তার হিসাব দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। বাকি সাত কলেজের কাছে তথ্য চেয়েও পায়নি অধিদপ্তর। অধিদপ্তরের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, ৬২ কলেজে শিক্ষক আছেন ৬ হাজার ৩৫৭ জন। আর বিএমডিসি’র মানদন্ড অনুযায়ী এসব কলেজে অন্তত ১৭ হাজার ৫০০ শিক্ষক প্রয়োজন। অর্থাৎ বেসরকারি খাতও চলছে ৬৩ শতাংশ শিক্ষকের কমতি নিয়ে।


বিশ্ববিদ্যালয় কম্পাস পত্রিকার সংখ্যা সমূহ

আরো সংবাদ

শিশু ক্যাম্পাস

বিশেষ সংখ্যা

img img img