ঢাকা কমার্স কলেজের এডহক কমিটি ও গভর্নিং বডি গঠনে অনিয়ম এবং আদালত অবমাননার অভিযোগ উঠেছে। সূত্র বলছে, গত বছরের ৫ আগস্ট স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ২৯ আগস্ট এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে সব ডিগ্রি কলেজের কমিটি ভেঙে নতুন কমিটি গঠনের নির্দেশনা দেয়। নতুন করে এডহক কমিটি গঠনের জন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধানকে ৩জন করে সভাপতি ও বিদ্যোৎসাহী সদস্যদের নামের প্রস্তাব পাঠানোর জন্য কলেজ কর্তৃপক্ষকে বলা হয়। ঢাকা কমার্স কলেজ প্রতিষ্ঠান-প্রধান হিসেবে কলেজ অধ্যক্ষ প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী ২ সেপ্টেম্বর ২০২৪ তারিখে একটি তালিকা পাঠালেও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সেই তালিকা অনুসরণ না করে নিজেদের ইচ্ছেমতো ব্যক্তিদের দিয়ে এডহক কমিটি গঠন করেন। এ কমিটি বিধি বহির্ভূত বলে অনিয়মের অভিযোগ এনে কলেজের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ও প্রথম অধ্যক্ষ জনাব শামসুল হুদা এফসিএ আদালতের শরণাপন্ন হলে মাননীয় হাইকোর্ট জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য গঠিত কমিটিকে বেআইনি ঘোষণাক্রমে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে কারণ জানতে চেয়ে এক রুল নিশি ইস্যু করেন। কিন্তু আদালতের রুল নিশি মোতাবেক কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি উপাচার্য। ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ তারিখে মাননীয় হাইকোর্টের একটি ডিভিশন বেঞ্চ উক্ত এডহক কমিটিকে অবৈধ ঘোষণা করে অধ্যক্ষ প্রেরিত তালিকা মোতাবেক কমিটি গঠনের নির্দেশনা দিয়ে রায় ঘোষণা করেন। উক্ত রায়ের কোন তোয়াক্কা না করে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ঢাকা কমার্স কলেজের গভর্নিং বডি অনুমোদন দেন বলে জানা যায়। বিষয়টি নিয়ে সংশ্লিষ্ট ছাত্র-শিক্ষক-অভিভাবক মহল মনে করছেন এটি পুরোপুরি বিধিবহির্ভূত এবং আদালত অবমাননার শামিল। কমিটি গঠনে আদালতের স্পষ্ট নির্দেশনা থাকার পরও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কীভাবে এমন সিদ্ধান্ত নেয়, তা নিয়ে জনমনে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা কমার্স কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর ড. মো. আবু মাসুদ বলেন, সমস্যাটি আদালতের এখতিয়ারভুক্ত বলে আমি কোনো মন্তব্য করতে চাই না। এদিকে এসব বিষয়ে জানতে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. এ এস এম আমানুল্লাহর মুঠোফোনে কল করলে রিসিভ না করায় কথা বলা সম্ভব হয়নি। তবে আদালতে অভিযোগকারী জনাব শামসুল হুদা জানান, আদালতের নির্দেশনা বাস্তবায়নে মাননীয় উপাচার্যের নিকট বারবার আবেদন করেও কোন কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি। তিনি প্রতিবেদকের কাছে প্রশ্ন রাখেন, দেশের সর্বোচ্চ আদালতের নির্দেশনা গুরুত্বহীন হয়ে পড়লে সাধারণ মানুষ কোথায় আশ্রয় নিবে?