পৌরাণিক গল্পে আমরা শুনেছি হাতির মাথা কেঁটে শিশু গণেশের শরীরে জুড়ে দিতে আর তারপর থেকে গণেশ বড় হচ্ছে হাতির মাথা নিয়ে! এ গল্প কল্পকথা হলেও সেদিন আর বেশি দূরে নেই যেদিন মানুষ আসলেই সম্ভব করবে এই অসম্ভবকে! একজন বৃদ্ধের মস্তক নিয়ে জুড়ে দেয়া যাবে কোনো তরুণ শরীরে। এই উদ্যোগ মানুষকে অমরত্ব এনে না দিলেও করতে পারবে দীর্ঘজীবী!
এমনই এক উচ্চাভিলাষী প্রকল্প হাতে নিয়েছেন ইতালির নিউরো সার্জন সার্জিও ক্যানভেরো। তিনি এরইমধ্যে পেয়েও গেছেন তার মস্তক ডোনার। রাশিয়ার ৩০ বছর বয়সি ভেলেরি স্পিরিদোনভ, যিনি দীর্ঘদিন ধরে ওয়েরদিং-হফম্যান মাসল ডিজিজ নামে এক জেনেটিক রোগে ভুগছেন।
২০১৩ সালে তুরিন এডভান্সড নিউরোমডুলেশন গ্রুপ এই প্রস্তাবটি নিয়ে আসে, যাতে করে ক্যান্সারে আক্রান্ত শরীর বা প্যারালাইজড শরীরকে পুনরায় কর্মক্ষম করা সম্ভব হবে। কিন্তু আসলেই কি এটা বাস্তবে সম্ভব? দু’টো স্পাইনাল কর্ডকে কি পুরোপুরি ফিউজড করা সম্ভব বা শরীর যদি মাথা রিজেক্ট করে? এ বিষয়ে ক্যানোভেরো বলেন- টেকনিক্যালি আমরা এখন যে পর্যায়ে রয়েছি, তাতে করে আমাদের সফল হওয়ার সম্ভাবনা শতকরা ৯০ ভাগ।
তিনি জানান, প্রথমে দাতার শরীর এবং গ্রহীতার মস্তিস্ক শীতল করে নেয়া হবে। এরপর ঘাড়ের টিস্যু আলাদা করে নেয়া হবে, রক্তনালীগুলি টিউবের মাধ্যমে সংযুক্ত করা হবে এবং শেষে স্পাইনাল কর্ড বিচ্ছিন্ন করা হবে। এসময় রোগীকে কোমাতে নিয়ে যাওয়া হবে এবং তিনি স্বর্গীয় অনুভূতি লাভ করবেন। অবশ্য এজন্য আমার ১৫০ জন ডাক্তার-নার্সের সহযোগিতা দরকার হবে। আর সময় লাগবে আনুমানিক ৩৬ ঘণ্টা।
এ বিষয়ে সকল সংশয়-সমালোচনাকে উড়িয়ে দিয়ে ক্যানভেরো বলেন, আমরা ইতোমধ্যে মস্তিষ্ক প্রতিস্থাপন সফলভাবে করেছি। সবকিছু ঠিক থাকলে ২০১৭ সালে ঘটতে যাচ্ছে এই বৈজ্ঞানিক মিরাকেল, যেখানে একজনের মাথা অন্যজনের শরীরের সঙ্গে জুড়ে দেয়া হবে!