সরকার চাইলে ছাত্ররাজনীতি ঢুকবে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে। অন্যথায় যেভাবে চলছে সেভাবেই চলবে তারা। সরকার চাপিয়ে না দিলে প্রতিষ্ঠানগুলো নিজেরা ছাত্ররাজনীতি চালু করবে না। এ ছাড়া প্রতিটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের কাউন্সিলিংয়ের জন্য আলাদা ব্যবস্থা থাকবে। ৩০ থেকে ৪০ শিক্ষার্থীর জন্য একজন শিক্ষককে পরামর্শদাতা হিসেবে নিয়োগ করা হবে। প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ে বাধ্যতামূলকভাবে জঙ্গিবাদবিরোধী কমিটি গঠন করতে হবে।
সম্প্রতি রাজধানীর বনানীতে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের অস্থায়ী কার্যালয়ে সংগঠনের সভায় এসব সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
সভায় নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (এনএসইউ) শিক্ষার্থীরা একে একে জঙ্গিবাদে জড়িয়ে যাওয়ার ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়টির বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারম্যানকে তলব করা হয়। এনএসইউয়ের বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারম্যান আজিম উদ্দিন তাঁদের বর্তমান পদক্ষেপগুলো সভাকে অবহিত করেন।
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি শেখ কবির হোসেন বলেন, এতদিন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্ররাজনীতি ছিল না। আমরা মনে করি না যে ছাত্ররাজনীতি চালু হলেই সব পরিস্থিতির উন্নতি হবে। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে তো ছাত্ররাজনীতি আছে। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের চেয়ে তাদের ওখানে কি অপরাধ কম? সরকার বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমোদন দিয়েছে। তাই সরকার চাইলে ছাত্ররাজনীতির সুযোগ দেব আমরা।
সভা সূত্রে জানা যায়, সব জাতীয় এবং সাংস্কৃতিক দিবস পালন করতে হবে। পহেলা বৈশাখ, স্বাধীনতা দিবসের মতো সব জাতীয় দিবস বড় অনুষ্ঠানের মাধ্যমে পালনেরও সিদ্ধান্ত হয়। শিক্ষার্থীদের জন্য যে পরামর্শদাতা নিয়োগ করা হবে, তিনি প্রত্যেককে গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করবেন। প্রতি মাসে রিপোর্ট দেবেন। তাঁর রিপোর্টের ওপর ভিত্তি করে প্রয়োজনে শিক্ষার্থীর অভিভাবকের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কথা বলবে। আর সন্দেহজনক কিছু হলে প্রয়োজনে পুলিশকে জানানো হবে।
সভা সূত্রে আরো জানা যায়, প্রত্যেক শিক্ষার্থীর দৈনিক হাজিরা নেওয়া, তিন দিনের বেশি অনুপস্থিত থাকলে অভিভাবককে জানানো, ভর্তির সময় ‘জঙ্গিবাদে জড়াবে না’ মর্মে প্রত্যেক শিক্ষার্থী-অভিভাবকের মুচলেকা নেয়া, শিক্ষক নিয়োগের পর পুলিশ ভেরিফিকেশন করানোসহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হয়। এ ছাড়া সভায় এলএলবি ডিগ্রির বিষয়ে হাইকোর্টের দেয়া নির্দেশনা নিয়েও আলোচনা হয়। এ ব্যাপারে ইউজিসি’র সঙ্গে আলোচনার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
তবে বৈঠকের একটি সূত্র জানিয়েছে, দুই বছরের এলএলবি প্রোগ্রাম এবং বার কাউন্সিল কর্তৃক ভর্তি পরীক্ষা গ্রহণ ও এলএলবি ডিগ্রির জন্য শিক্ষার্থীর আবেদনের যোগ্যতার বিষয়ে দেয়া নির্দেশনার ওপর মালিক সমিতি আপিল অথবা রিট মামলা দায়েরের ব্যাপারে প্রাথমিক আলোচনা করেছে। ইউজিসি’র সঙ্গে আলোচনা শেষে সমিতি এ ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে।